May 19, 2025, 9:04 am

আলোচিত জুঁই হত্যা মামলায় গ্রেফতার ৫, রহস্য উদঘাটন

নাটোর প্রতিনিধি :
আলোচিত জুঁই হত্যা মামলায় গ্রেফতার ৫, রহস্য উদঘাটন

নাটোরের বড়াইগ্রামে আলোচিত আকলিমা আক্তার জুঁই (৭) হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। পহেলা বৈশাখ উদযাপনের অংশ হিসেবে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ৫ কিশোর জুঁইকে গণধর্ষণের পর হত্যা করে। এ ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার এ ব্যাপারে পাবনার চাটমোহর থানার ওসি মনজুরুল আলম প্রেস ব্রিফিংয়ে হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত বর্ণনা করেন। পরে গ্রেফতারদের পাবনা আদালতে পাঠানো হয়। গ্রেফতার ৫ জনই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

হত্যাকাণ্ডের ৫ দিনের মধ্যে বড়াইগ্রাম ও চাটমোহর থানা পুলিশ এবং ডিবি পুলিশের যৌথ অভিযানে অভিযুক্ত পাঁচ কিশোরকে গ্রেফতারের পর হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য জানা যায়।

গ্রেফতাররা হলেন- উপজেলার দিয়াড়গাড়ফা গ্রামের শাহীন আলীর ছেলে সিয়াম হোসেন (১৩), গাড়ফা উত্তরপাড়া গ্রামের আয়নাল হোসেনের ছেলে শেখ সাদী (১৬), শফিকুল ইসলামের ছেলে আব্দুল্লাহ (১৬), সুলতান হোসেনের ছেলে সোহেল রানা (২৫) এবং গাড়ফা দক্ষিণপাড়া গ্রামের দুলাল হোসেনের ছেলে সাকিব হোসেন (১৬)। গ্রেফতারদের মধ্যে সিয়াম স্থানীয় ডিকে উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র এবং শেখ সাদী ও আব্দুল্লাহ অপকর্মের দায়ে মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কৃত। সোহেল বিবাহিত দিনমজুর ও সাকিব ট্রাক্টরচালক।

প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, অভিযুক্তরা পহেলা বৈশাখে আনন্দ করার পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে নিজেরা টাকা তুলে দেহ ব্যবসায়ী নারী ভাড়া করার চেষ্টা করেন এবং নেশাদ্রব্য কেনেন। ঘটনার দিন (১৪ এপ্রিল) বিকালে তারা জুঁইয়ের বাড়ির পাশের আমবাগানে বসে গাঁজা সেবন করছিল। হঠাৎ জুঁই দাদির বাড়ি থেকে বেড়ানো শেষে সেখানে আম কুড়াতে যায়। এ সময় শেখ সাদি জুঁইকে সেখান থেকে জনৈক দুলালের কলাবাগানে নিয়ে যান। সেখানে ৪ মিলে তাকে ধর্ষণ করেন। এরপর তারা শিশুটিকে ধরাধরি করে পাশের ভুট্টাখেতে নিয়ে যাওয়ার সময় জুঁইদের বাড়ির পাশে নানাবাড়িতে বেড়াতে আসা সিয়াম বিষয়টি দেখে ফেলেন। পরে তারা সিয়ামকেও প্রলুব্ধ করে শিশুটিকে পুনরায় ধর্ষণ করেন।

ধর্ষণের পর তারা জুঁইয়ের পরনে থাকা লাল রঙের প্যান্ট গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করেন এবং ঘাড় মটকে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। এরপর অ্যাসিড জাতীয় দাহ্য পদার্থ দিয়ে তার মুখ ঝলসে দেওয়া হয়। পরে তারা ভুট্টাখেতে বিবস্ত্র লাশটি উপুড় করে ফেলে রেখে চলে যায়।

প্রসঙ্গত, ১৪ এপ্রিল দাদির বাড়িতে যাওয়ার জন্য বের হয়ে নিখোঁজ হয় গাড়ফা প্রবাসী জাহিদুল ইসলামের শিশুকন্যা জুঁই। পরদিন বাড়ি থেকে একশ গজ দূরে চাটমোহরের রামপুর বিলের একটি ভুট্টাখেতে তার বিবস্ত্র ও মুখমণ্ডল ঝলসানো লাশ পাওয়া যায়। ওই রাতেই জুঁইয়ের মা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুক পেজ
Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com