বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন নানা ধরনের শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। গত কয়েক বছরে উন্নত চিকিৎসার জন্য বারবার বিদেশ যেতে চাইলেও আওয়ামী লীগ সরকার তাতে সম্মতি দেয়নি। চিকিৎসা হয়েছে দেশেই। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর মাস তিনেক আগে (৭ জানুয়ারি) লন্ডনে গিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন খালেদা জিয়া। সেখানে শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়ে এখন স্থিতিশীল।
সার্বক্ষণিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মনিটরিং ও পরিবার-পরিজনের সান্নিধ্য খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের উন্নতির পথে বড় ভূমিকা রাখছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘ম্যাডাম তো দেশে বন্দি অবস্থায় ছিলেন। লন্ডনে মুক্ত পরিবেশে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তার পরিবারের সদস্যদের সান্নিধ্যে রয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই তার উন্নতি হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর পূর্ণ আস্থা রাখেন। তার চিকিৎসায় দেশীয় চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ চেষ্টা রয়েছে। শুধু যে চিকিৎসা দেশে হয় না, তার জন্যই লন্ডনে যাওয়া।’
খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন পরিবার-পরিজনের সান্নিধ্যবঞ্চিত ছিলেন। প্রত্যেক মানুষের ভালো থাকার অন্তরালে যে মানসিক প্রশান্তির একটি বিষয় থাকে সেটি থেকে দূরে ছিলেন তিনি। লন্ডনে ভালো চিকিৎসা ও পরিবারের সদস্যদের কাছে পেয়ে বেশ উৎফুল্ল তিনি। ঈদের দিন তার বড় সন্তান দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনের বাসায় মা ও স্ত্রী-সন্তানসহ একটি ছবি পোস্ট করেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সেখানেও খালেদা জিয়াকে বাহ্যিকভাবে প্রফুল্ল দেখা যায়। বিগত কয়েক বছরে তার এমন অবস্থা দেখা যায়নি বললেই চলে। শারীরিক অবস্থার উন্নতির পেছনে যে পরিবারের কাছে থাকারও একটি বড় ভূমিকা আছে সেটা অনুমেয়।
বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন লন্ডনে অবস্থান করছেন। তিনি চিকিৎসা সংক্রান্ত সব বিষয়ে দেখভাল করেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর পূর্ণ আস্থা রাখেন। তার চিকিৎসায় দেশীয় চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ চেষ্টা রয়েছে। শুধু যে চিকিৎসা দেশে হয় না, তার জন্যই লন্ডনে যাওয়া।- বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম
লন্ডন থেকে ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘ম্যাডাম ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসায় আছেন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা ওনাকে টাইম টু টাইম দেখছেন। ম্যাডামের স্বাস্থ্যের অবস্থা এখন স্থিতিশীল।’
লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি হওয়ার পর ডা. জাহিদ হোসেন ওই সময় কিছু আপডেট জানিয়েছিলেন। তিনি সে সময় জানান, খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিস, পরবর্তীসময়ে কম্পেনসেন্টারি লিভার ডিজিজ বলে গ্রেড-টু, সেটার জন্য টিপস (চিকিৎসাবিজ্ঞানের বিশেষ পদ্ধতি) করা হয়েছে। হার্টে স্টেন্টিং করার পর চেক করে আবার সেটার জন্য রি-স্টেন্টিং করে অথবা চেক করে দেখতে হয় যে স্টেন্টিংটা ভালোভাবে কাজ করছে কি না।