রাজশাহীর দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দুরুল হোদাকে অযোগ্য ওসি বলে আখ্যায়িত করেছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ। একই সাথে ওসিকে প্রত্যাহারে পুলিশ সুপারকে অনুরোধ করনে বিএনপি নেতা চাঁদ।
বুধবার বিকেলে রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার আমগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত বিএনপি কর্মী মকবুল হোসেনের জানাজা নামাজে উপস্থিত হয়ে এ কথা বলে বিএনপি নেতা আবু সাঈদ চাঁদ। উপস্থিত স্থানীয় সাংবাদিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি তার বক্তব্য কোড করে সংবাদ প্রকাশ করার অনুরোধ জানান।
আবু সাঈদ চাঁদ তার বক্তব্যে আরও বলেন, এর আগেও এই এলাকায় চাঁদাবাজি হয়েছে৷ মারধোর, হামলার ঘটনা ঘটেছে। সব ঘটনার সাথে আব্দুল আহাদ নামের এক যুবক জড়িত। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ওসিকে বলেছিলাম। কিন্তু ওসি কোনো ব্যবস্থা নেননি। আহাদের নাম শুনলে নাকি ওসির কাপড় নষ্ট হয়। ২৪ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও মকবুল হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার করেননি ওসি। এই ওসি একজন অযোগ্য ওসি। এসপি’র কাছে অনুরোধ রাখছি এই ওসিকে যেন দ্রুত প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। আমরা এমন ওসিকে আর থানায় দেখতে চায়না। না হলে মকবুলের কবর থেকে ‘থানা মার্চ’ কর্মসুচি নেয়া হবে। এতে তিনি উপস্থিত জনতার সমর্থনের আহ্বান জানান।
জানা গেছে, গত সোমবার রাতে এশার নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে বাড়ি ফিরছিলেন দেলুয়াবাড়ি ইউনিয়নের আমগ্রাম এলাকায় বিএনপি কর্মী মকবুল হোসেন। এক নারীর অনশণকে কেন্দ্র করে স্থানীয় যুবদল নেতা আব্দুল আহাদের লোকজন মকবুল হোসেনের উপর হামলা করে। ঘটনার একদিন পর রাজশাহীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মকবুল।
বুধবার আমগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মকবুল হোসেনের জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাজে নামাজে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ ছাড়াও অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুজ্জামান আয়নাল, সদস্য সচিব অধ্যাপক জোবায়েদ হোসেন, পৌরসভা বিএনপির আহবায়ক হাসানুজ্জামান লাল্টু, উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আশরাফুল কবীর বুলু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র সাইদুর রহমান মন্টু, কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক কোষাধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফা, জেলা যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জুলফিকার রহমান ভুট্টু, বিএনপি নেতা জার্জিস হোসেন সোহেল আজাদ রেজাউল করিম রেজা, উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাস্টার সাইফুল ইসলাম, দেলুয়াবাড়ী ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান প্রমুখ।
এদিকে, নিহত মকবুল হোসেনের জানাজা নামাজে রাজনৈতিক নেতাকর্মী ছাড়াও শতশত মানুষ জানাজায় অংশ নেন।
অপরদিকে, বুধবার দুপুরে এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহত মকবুল হোসেনের স্ত্রী আসমা বেগম বাদী হয়ে দুর্গাপুর থানায় মামলা দায়ের করেছে। ১৩ জন এজাহার নামীয় ছাড়াও অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে আরও ৪/৫ জনকে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুর্গাপুর থানার সেকেন্ড অফিসার (এসআই) ইব্রাহিম হোসেন।
এ বিষয়ে জানতে দুর্গাপুর থানার ওসি দুরুল হোদার সরকারি মুঠোফোনে কল করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) রফিকুল আলম বলেন, মামলা দায়ের যেহেতু হয়েছে সেহেতু হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ওসি’র অপসারণ প্রসঙ্গে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদের বক্তব্য’র বিষয়টি তার জানা নেই বলে এ প্রসঙ্গে মন্তব্য করেননি।