April 22, 2025, 12:48 am
শিরোনাম :
মেজর সিনহা হত্যা মামলায় ডেথ রেফারেন্স অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিষ্পত্তির সিদ্ধান্ত জাতীয়ভাবে ন্যূনতম মজুরি ও শ্রম আইনকে ‘সার্বজনীন’ করার সুপারিশ প্রশাসন বিএনপির নিয়ন্ত্রণে— ‘অভিযোগকারী কি উপদেষ্টা থাকাকালে তাদের বসিয়েছেন?’ স্বর্ণের ভরি ছাড়ালো ১ লাখ ৭২ হাজার টাকা হৃদয়কে খেলাতে ডিপিএলের নিয়মই বদলে ফেললো বিসিবি! পুঠিয়ায় আ’গুনে বসতবাড়ি পুড়ে ছাই, ৫ লক্ষ টাকা ক্ষয়ক্ষতি কাতারের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধান উপদেষ্টা এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্বে অবহেলা, ২৩ শিক্ষককে অব্যাহতি সমাজ থেকে বিভেদ দূর করতে একসাথে কাজ করার আহ্বান’ পারভেজ হত্যায় গ্রেফতার ৩ জনের ৭ দিনের রিমান্ড

যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে রোহিঙ্গারা, গোপনে চলছে প্রশিক্ষণ!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে রোহিঙ্গারা, গোপনে চলছে প্রশিক্ষণ!

মোহাম্মদ আয়াস নামের ২৫ বছর বয়সী এক রোহিঙ্গা যুবক ইনডিপেনডেন্টকে সশস্ত্র প্রস্তুতির আদ্যোপান্ত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, তাদের লক্ষ্য জান্তা বাহিনী ও অন্যান্য বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে প্রতিহত করে নিজেদের ভূমি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা। আগে শুধু জান্তার সঙ্গে লড়াই করার চিন্তা ছিল, এখন প্রয়োজনে আরাকান আর্মির (এএ) বিরুদ্ধে তারা অস্ত্র ধরতে প্রস্তুত বলে জানান তিনি।

মোহাম্মদ আয়াস বলেন, তারা এ প্রস্তুতি দীর্ঘদিন ধরে নিচ্ছেন। বিশেষ করে মিয়ানমারে ২০২১ সালে গৃহযুদ্ধ শুরুর পর থেকেই এ প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত হয়। এই প্রশিক্ষণ নেওয়া হচ্ছে মিয়ানমারের ভেতরেই। কর্তৃপক্ষের চোখ ফাঁকি দিয়ে তপ্ত রোদে অস্ত্র চালনা শিখছেন রোহিঙ্গারা।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ইনডিপেনডেন্ট বলছে, আয়াস কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের শিশুদের বার্মিজ ভাষা শেখান। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর মতো শত শত যুবক যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এবং অন্যান্য যেসব সশস্ত্র গোষ্ঠী তাদের পথের বাধা হবে, তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে তারা সবাই এক।

আয়াস বলেন, ‘আমরা প্রস্তুত। আমি আমার জনগোষ্ঠীর জন্য মরতে প্রস্তুত। নিজ মাতৃভূমিকে পুনরুদ্ধার করতে হবে। মিয়ানমারে আমাদের অধিকার ও স্বাধীনতার যুদ্ধে আমার কী হবে, এ নিয়ে আমি ভাবি না।’

 

কক্সবাজারের ক্যাম্পে কয়েক বছর ধরে থাকা হাজার হাজার রোহিঙ্গা যুবক স্ব-ইচ্ছায় সশস্ত্র গোষ্ঠীতে যোগ দিচ্ছেন বলে দাবি আয়াসের। সংবাদমাধ্যম ইনডিপেনডেন্ট একাধিক রোহিঙ্গার সঙ্গে কথা বলেছে। তাদের মধ্যে নিজেকে কমান্ডার হিসেবে দাবি করা এক ব্যক্তি জানিয়েছেন, তারা গোপনে মিয়ানমারে যান। যেখানে কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাসব্যাপী সশস্ত্র প্রশিক্ষণ নেন।

২০১৭ সালে বর্বর অত্যাচার ও নির্মম গণহত্যা চালিয়ে মিয়ানমারের রাখাইন থেকে রোহিঙ্গাদের উচ্ছেদ করে দেশটির সেনাবাহিনী। ওই সময় জীবন বাঁচাতে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। তারা এখন কক্সবাজারের ক্যাম্পে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

 

 

রোহিঙ্গারা দাবি করছেন, তাঁদের ওপর গণহত্যা চালানো হয়েছে। জান্তা বাহিনীর পাশাপাশি রাখাইনের স্থানীয় শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠীও নিপীড়ন করেছে রোহিঙ্গাদের। ২০২১ সালে অং সান সু চিকে ক্ষমতাচ্যুত করে বন্দী করার পর এই নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়। তিনি মুক্তি পেলে হয়তো এত নির্যাতন হতো না। এ কারণে তারা মাতৃভূমিকে ফিরে যেতে সশস্ত্র পথ বেছে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। তাদের দাবি, বিশ্ব এখন গাজা ও ইউক্রেন নিয়ে পড়ে আছে। তাদের দিকে কেউ নজর দিচ্ছে না।

বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা সংবাদমাধ্যম ইনডিপেনডেন্টকে জানান, প্রথমে ফিটনেস ট্রেনিং দেওয়া হয় গোপন প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে। এরপর তাদের কয়েকটি দলে ভাগ করা হয়। এদের মধ্যে কেউ কেউ অস্ত্র চালনা শেখেন। এ ছাড়া মার্শাল আর্টও শেখানো হয় ক্যাম্পে। অবশ্য এসব অস্ত্র কোথা থেকে আসে, সে ব্যাপারে প্রতিবেদনে স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়নি। আরেকটি দল সোশ্যাল মিডিয়া, কাউন্টার সারভেইলেন্স ও শত্রুদের অবস্থান শনাক্ত করার কৌশল শেখে।

 

 

এক রোহিঙ্গার ভাষ্য, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য শান্তি। আমরা বার্মায় অধিকার ও সুযোগ নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে চাই, যেখানে সরকার ও বিদ্রোহীরা উভয়ই আমাদের ভূমি দখল করেছে। আমরা আমাদের মাতৃভূমি ফিরে পেতে চাই এবং এর জন্য লড়াই করব।’

কোন গ্রুপের অধীনে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে–সে ব্যাপারে কিছু বলতে চাননি আয়াস। তিনি বলেন, ‘১ হাজারের বেশি লোক এখন যোগদান করেছে এবং প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। নিয়োগ হচ্ছে সব শিবিরে।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুক পেজ
Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com