রাজশাহীর পুঠিয়ায় পুকুর মাফিয়া মো: আবদুল হান্নান দীর্ঘদিন ধরে ফসলি জমি কেটে পুকুরে পরিণত করছেন। সর্বশেষ, গত ১৯ মার্চ রাত ১১টার দিকে শিলমারিয়া ইউনিয়নের গোড়াগাছি এলাকায় ৩০-৩৫ বিঘা জমিতে পুকুর কাটার খবর পেয়ে সংবাদ সংগ্রহে গেলে সাংবাদিকরা হামলার শিকার হন।
দৈনিক উপচার-এর ক্যামেরা পার্সন বখতিয়ার শাহরিয়ার লিয়ন, জাতীয় দৈনিক নতুন দিন-এর প্রতিনিধি মশিউর রহমান এবং সংবাদ ২৪ ঘণ্টা-এর সিনিয়র ক্যামেরা পার্সন মিশাল মণ্ডলসহ ৫-৬ জন সাংবাদিক ঘটনাস্থলে গেলে হান্নানের নেতৃত্বে সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী তাদের ঘিরে ধরে দেশিয় ও আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে
সাংবাদিকদের ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়।
ঘটনার ৬ দিন পেরিয়ে গেলেও পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসিল্যান্ড এবং থানার ওসির নীরব ভূমিকা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সাংবাদিক মহল। স্থানীয়ভাবে গুঞ্জন উঠেছে, পুকুর মাফিয়া হান্নান প্রতিদিন পুঠিয়া থানায় গিয়ে আর্থিক সুবিধা দিয়ে আসছেন, যার ফলে প্রশাসন তার বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
ওই দিন জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা, রাজশাহী বিভাগ-এর সভাপতি মোঃ নুরে ইসলাম মিলনের হস্তক্ষেপে ক্যামেরাগুলো উদ্ধার করা হয়। তবে সাংবাদিকদের প্রশ্ন, “কীসের জোরে পুকুর মাফিয়া হান্নান এখনো তার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন? নাকি অর্থের কাছে দায়িত্ব বিক্রি করেছে প্রশাসন?
স্থানীয় সুজন (সুশাসনের জন্য নাগরিক) নেতারা বলছেন, “প্রশাসনের নির্লিপ্ততা পুকুর মাফিয়াদের আরও উৎসাহিত করছে। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে সাধারণ জনগণের মধ্যে প্রশাসনের প্রতি আস্থা কমে যাবে।”
সাংবাদিক নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “যদি প্রশাসন সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করত, তাহলে পুকুর খনন বন্ধ হতো এবং সাংবাদিকদের ওপর হামলার মতো ঘটনা ঘটত না।”
এ বিষয়ে অভিযুক্ত হান্নান বলেন, “আমি পুকুর কাটার কাজ করি, এটা আমার ব্যবসা। আমি কখনো কারো পারমিশন নিয়ে পুকুর কাটিনা।
এদিকে সাংবাদিক সমাজ অবিলম্বে পুকুর মাফিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং নীরব ভূমিকা পালনকারী প্রশাসনের কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় এসকল কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে পুঠিয়া ও রাজশাহীতে মানববন্ধন কর্মসুচি পালম করা হবে বলেও জানান তারা।