আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ও জুলাই গণহত্যার বিচারের দাবিতে রাজশাহীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২১ মার্চ) জুমার নামাজের পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে তালাইমারি বিজয়২৪ চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। এরপর সেখানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় ‘শেম শেম, ওয়াকার’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনী কেন বাহিরে’, ‘অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘আওয়ামীলীগকে নিষিদ্ধ, করতে হবে করতে হবে’, ‘বিচার বিচার বিচার চাই, আওয়ামিলীগের বিচার চাই’, ‘আবু সাঈদ-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’ সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন আন্দোলনকারীরা।
বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগ আর এই দেশে রাজনীতি করার অধিকার রাখে না। বাংলাদেশ চলবে ছাত্র জনতার ম্যানডেট নিয়ে। এই দেশ ক্যান্টনমেন্ট বা দিল্লি থেকে পরিচালিত হতে পারে না। শহিদদের রক্তের সাথে আমরা বেইমানি করতে পারি না। আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসিত হতে যারাই সাহায্য করবে, তাদেরকে বিন্দু পরিমাণ ছাড় দেওয়া হবে না।
সমাবেশে রাবির সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী সজীব বলেন, শহিদদের রক্তের মাধ্যমে জুলাইয়েই এই ইস্যুর সমাধান হয়ে গেছে যে, আওয়ামী লীগ আর এই দেশে রাজনীতি করার অধিকার রাখে না। একটা রাজনৈতিক দলের কাজ হচ্ছে রাজনীতি করা। কিন্তু সে রাজনীতি না করে যখন গণহত্যায় মেতে ওঠে, সে যখন খুন-গুম-ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করে, তখন এ অঞ্চলে তাকে নাৎসি পার্টি হিসেবে নিষিদ্ধ করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকতে পারে না। আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে এ বাংলার জমিনে শুধু জলপাই কালারের কেউ নয় কোনো রাজনৈতিক দলও যদি তাদের দোসর হিসেবে আবির্ভূত হয়, তবে আমরা ছাত্র-জনতা কোনোভাবে এটা বরদাস্ত করবো না।
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, আমরা ৫ আগস্টেই নিশ্চিত করে ফেলেছি, আওয়ামী লীগকে বাংলার মাটিতে রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না। আওয়ামী লীগ যদি বাংলার মাটিতে আসতে চায়, তাহলে দুই সহস্রাধিক শহিদের জীবন ফিরিয়ে দিতে হবে। বাইশ হাজারের অধিক আহতদের আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে হবে। ফ্যাসিবাদের ১৫ বছরে যত মানুষ গুম-হত্যার শিকার হয়েছে, তাদের জীবন ফিরিয়ে দিতে হবে। তারপর আওয়ামী লীগ রাজনীতি করতে পারবে নাকি পারবে না, জনগণ সেই সিদ্ধান্ত নিবে।
এসময় অন্যদের মধ্যে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, রাবির সমন্বয়ক মাহায়ের ইসলাম, নুরুল ইসলাম শহীদ সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অর্ধ-শতাধিক শিক্ষার্থী, স্থানীয় ছাত্রদলের নেতাকর্মী ও স্থানীয় জনতা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার এক বক্তব্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস বলেছেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোনো পরিকল্পনা অন্তর্বতীকালীন সরকারের নেই। একইদিন জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ এক ফেসবুক পোস্টে জানান, তাদের ক্যান্টমেন্টে ডেকে আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে ফিরতে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এর প্রতিবাদেই সারাদেশের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।