February 9, 2025, 8:07 am

বিএনপি পন্থি ২৫ কাউন্সিলর অংশ নিচ্ছেন রাসিক নির্বাচনে, কেউ কেউ ছুটছেন আ.লীগের দিকে

জি.আর রনক :
বিএনপিপন্থি ২৫ কাউন্সিলর অংশ নিচ্ছেন রাসিক নির্বাচনে, কেউ কেউ ছুটছেন আ.লীগের দিকে

রাজশাহী সিটি নির্বাচনে বিএনপিপন্থি অন্তত ২৫ জন কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এদের মধ্যে অনেকেই আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী ও বর্তমান মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে মেয়র পদে বিএনপির কোনো প্রার্থী থাকছেন না। এমনকি কয়েকদিন আগে বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সাধারণ সম্পাদক সাইদ হাসানও এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না বলে তাঁর ঘোনিষ্ট একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এতে করে মেয়র পদে এবার অনেকটায় নির্ভার আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। আর সেই সুযোগ নিতে কাউন্সিলর প্রার্থীরা ঝুঁকছেন তাঁর দিকে। এমনকি বিএনপির প্রার্থীরাও মেয়র লিটনের দিকে ঝুঁকছেন। গত ১০ বছরে বিএনপিপন্থি অন্তত ৫ জন কাউন্সিলর আওয়ামী লীগে ভিড়েছেন। এবার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আরও অন্তত ১০-১২ জন কাউন্সিলর প্রার্থী মেয়র লিটনের সমর্থন পেতে ছুটছেন বলেও একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

দলীয় সূত্র মতে, রাজশাহীর ৩০টি ওয়ার্ড থেকে এবার অন্তত ২৫ জন বিএনপিপন্থি কাউন্সিলর প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। যাঁদের মধ্যে মনোনয়নপত্র সংগ্রহকারী বিএনপি নেতাদের মধ্যে রয়েছেন-১৬ নম্বর ওয়ার্ডে শাহমখদুম থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক বেলাল হোসেন, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে মহানগর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুজ্জামান টিটো, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক টুটুল, ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আব্দুস সোবহান লিটন, ১২ নম্বর ওয়ার্ডে বোয়ালিয়া থানা বিএনপির সহ-সভাপতি দিলদার হোসেন, ১১ নম্বর ওয়ার্ডে ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি কিনু, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে বোয়ালিয়া থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম মিলু, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি জিল্লুর রহমান, ২৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আনোয়ারুল আমিন আযব, ২৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও বিএনপি নেতা আশরাফুল হাসান (বাচ্চু)। এছাড়া সংরক্ষিত ১৩, ১৪ ও ১৫নং ওয়ার্ডে মহানগর মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক সামসুন নাহার এবং সংরক্ষিত ৬, ৭ ও ৮নং ওয়ার্ডে মহানগর মহিলা দলের সভানেত্রী বেলি খাতুন মনোনয়নপত্র সংগহ্র করে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও আরও অন্তত ১০-১২ জন্ বিএনপিপন্থি কাউন্সিলর প্রার্থী এবার নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

বিএনপিপন্থি কাউন্সিলরদের একাধিক ঘোনিষ্ঠ সূত্র নিশ্চিত করেছেন, মেয়র পদে বিএনপির কোনো হেভিওয়েট প্রার্থী থাকছে না এবার সিটি নির্বাচনে। এমনকি দ্বিতীয় বা তৃতীয় সারির কোনো নেতাও অংশ নিচ্ছেন বলে এখন পর্যন্ত অনেকটাই নিশ্চিত। গত কয়েকদিন আগে মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক সাইদ হাসান নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন এমনটি শোনা গেলেও তিনিও সেখান থেকে সরে গেছেন। গত বৃহস্পতিবার বিবৃতি দিয়ে তিনি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। ফলে মেয়র পদে বর্তমান মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনই এবারও নির্বাচিত হচ্ছেন-এমনটিই ধরে নেওয়া হচ্ছে। আর সেই সুযোগটি কাজে লাগাতে এবং আওয়ামী লীগের সমর্থন পেতে বিএনপিপন্থি অনেক কাউন্সিলর প্রার্থীরাও ছুটছেন লিটনের কাছে।

এদিকে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগপন্থি কাউন্সিলরদের পাশাপাশি বিএনপিপন্থি কাউন্সিলররা নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন সমানে। নগরীর জিন্নাহনগর এলাকায় গতকালকেউ ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ও শাহমখদুম থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক বেলাল হোসেনের ফেস্টুন বিদ্যুতের পোলে ঝুলতে দেখা গেছে।

জানতে চাইলে বেলাল হোসেন বলেন, দলীয় ব্যানারে এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি না। কাউন্সিলর প্রার্থীদের সেই সুযোগ নাই। এলাকার সাধারণ মানুষ আমাকে চান, তাই এবারও নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। দল সাংগঠনিকভাবে কোনো ব্যবস্থা নিলেও করার কিছু নাই।’

জানতে চাইলে ২৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আনোয়ারুল আমিন আযব বলেন, ‘দলের কোনো প্রসঙ্গ কাউন্সিলর পদের জন্য নই। এলাকার মানুষের কথা বিবেচনা করে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। দল সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নিলে নিতে পারে।’

রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ইশা বলেন,‘ আমরা বেশকিছু কাউন্সিলর পার্থীর নাম শুনতে পাচ্ছি। কিন্তু সিটি নির্বাচনে এখনো চূড়ান্তভাবে প্রার্থী কেউ হননি। তাই কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্তা নেওয়া হয়নি। সর্বশেষ কারা নির্বাচনে থাকছে, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তবে বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো প্রার্থী এ নির্বাচনে অংশ নিবে না। এমনকি আমরা ভোট দিতেও যাবো না।’

রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ আলী কামাল বলেন, ‘কাউন্সিলর পদে আমাদের দলেরই অনেকেই অংশ নিচ্ছে। আমরা কাউকিই সমর্থন দিব না। আমাদের প্রধান লক্ষ্য মেয়র পদে বিজয়। সেটা নিশ্চিত করেই ঘরে ফিরব। এর বাইরে যারা যে যার মতো করে কাউন্সিলর পদে নির্বাচিত হয়ে আসুক আমাদের কোনো কিছু বলার নাই।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুক পেজ